Fact Check: একটি ধাবা থেকে আমেদাবাদ পুলিশের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার ছবি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে যুক্ত করা হচ্ছে ২০২০ সালের বেঙ্গালুরু দাঙ্গার সঙ্গে

0 304

সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যাতে দাবি করা হচ্ছে একটি ধাবা থেকে গুজরাত পুলিশ মহম্মদ সিরাজ হোসেন নামের বেঙ্গালুরু দাঙ্গার এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে।

ভিডিওটি যে ক্যাপশন দিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে তা হল:‌ “সিনেমা নয়… বাস্তব ! সিসিটিভি লাইভ ফুটেজে দেখুন কিভাবে #BangaloreRiot ব্যাঙ্গালোর দাঙ্গার #মাস্টারমাইন্ড #মহম্মদ_সিরাজ_হোসেন কে গুজরাত থেকে গ্রেপ্তার করলো NIA অফিসারেরা!”

এখানে উপরের পোস্টের (‌ post )‌ ‌লিঙ্ক দেওয়া হল।

Fact Check

নিউজ মোবাইল এই পোস্টের ফ্যাক্ট চেক করে দেখেছে যে এটি বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা।

আমরা এই ভিডিও থেকে কি ফ্রেম–গুলি নিয়ে ইনভিড় টুল ব্যবহার করে সেগুলির রিভার্স ইমেজ সার্চ করি।

আমরা দেখতে পাই এই ভিডিওটি এবিপি নিউজ (‌ ABP News )‌ শেয়ার করেছিল এই শিরোনাম সহ:‌ ‘‌ফিল্মি কায়দায় আমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ এক পলাতক দুষ্কৃতিকে ধরল’‌।

এবিপি নিউজ (‌ ABP News )‌–এর রিপোর্ট অনুযায়ী এই ভিডিওটি গুজরাতের পাটান শহরের অমরপুরার একটা রেস্টুরেন্টে ২০২১ সালের ২৭ জুন রেকর্ড করা হয়েছিল।

এই ভিডিওটিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (‌ Indian Express )‌–এ ১ জুলাই প্রকাশিত একটি নিবন্ধের সঙ্গেও পাওয়া যাচ্ছে। ওই রিপোর্টে বলা আছে, ‘‌সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে সাদা পোশাক পরা ডিটেকশন অফ ক্রাইম ব্রাঞ্চ (‌বিসিবি)‌–এর কিছু অফিসার কিশোর পাঞ্চাল ওরফে কে কে নামের বনসকণ্ঠ জেলার দিসা এলাকার একজনকে গ্রেপ্তার করছে। অভিযুক্তের কাছ থেকে একটি সেমি–অটোমেটিক পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন এবং ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

রিপোর্টে একথাও বলা হয়েছিল যে ‘‌পাঞ্চালকে ধরা হচ্ছিল সশস্ত্র লুঠ, গাড়ি চুরি, তোলাবাজি, বাড়ি ভেঙে ঢুকে আক্রমণ, এবং ধর্ষণের অভিযোগে। আমেদাবাদ, বনসকন্ঠ এবং রাজস্থানের দশটি থানা তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল।’‌

এ থেকে প্রমাণ হয় উপরের ভিডিওটিতে আমেদাবাদ পুলিশ যাকে গ্রেপ্তার করছে তার নাম কিশোর পাঞ্চাল। এখানে কোথাও দাঙ্গার সঙ্গে তার যুক্ত থাকার কথা বলা হয়নি।

এরপর আমরা ভারুচ থানা এলাকায় সিরাজ নামের কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সংক্রান্ত খবরের সন্ধান করি। কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা দেখতে পাই  ‘‌চারোতর উদয়’‌ (‌ Charotar Udai )‌ নামের একটি একটি গুজরাটি ওয়েবসাইটে একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে বেআইনিভাবে অস্ত্র রাখার দায়ে ভারুচের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসাররা সিরাজ মনসুর আলাম আনসারি নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আমরা ৩০ জুন তারিখের দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (‌ The Indian Express )‌–এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধ দেখতে পাই। এতে বলা হয়েছিল, বিহারের লোক সিরাজ মনসুর আলাম আনসারি আমোডের ভীমপুর এলাকায় বাস করছিল।

রিপোর্টে একথাও বলা হয়েছিল যে তাকে ভারুচের দারোল চকড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

২০২১ সালের ২৯ জুন ভারুচ পুলিশ (‌ Bharuch Police )‌ তাদের অফিসিয়াল টুইটারে এই বিষয়টি পোস্ট করেছিল।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে বা ভারুচ পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ( Bharuch Police ) কোথাও সিরাজ মনজুর আলম আনসারির সঙ্গে দাঙ্গায় যুক্ত থাকার কোনও অভিযোগের উল্লেখ নেই।

ওপরের তথ্য থেকে আমরা এই উপসংহার টানতে পারি যে সামাজিক মাধ্যমে যে পোস্টগুলির শেয়ার করা হচ্ছে সেগুলি মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।