রাজস্থানের জালোর জেলার সুরানা গ্রামের নয় বছর বয়সী এক দলিত ছেলেকে ( Dalit boy ) তার শিক্ষক জলের পাত্র স্পর্শ করার জন্য পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ২০ জুলাই, ২০২২-এ ঘটেছিল। তারপরে ছেলেটিকে আহমেদাবাদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শিশুটি ১৩ আগস্ট, ২০২২-এ আঘাতজনিত কারণে মারা যায়।
এই পটভূমিতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক শিক্ষক ক্লাসরুমে একটি শিশুকে মারধর করছেন। অনেক ব্যবহারকারী ভিডিওটিকে জালোরের ঘটনার সাথে যুক্ত করে শেয়ার করছেন।
একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি এই ক্যাপশন সহ পোস্ট ( posted ) করেছেন: “मेरा क्या, कसूर था ? पानी ही तो पिया था। मैं अबोध , क्या जानू क्या जाती, क्या पाती? मेरे छूने से होता मैला मटका फोड़, तू देता। मैंने तो भगवान माना तू राक्षस, तो निकला।” (অনুবাদ: “আমার কী দোষ ছিল? শুধু জলই তো খেয়েছি। আমি অবোধ, কী জানি কী জাতি, কী পাতি? আমি ছুঁয়ে দিলে একটা মাটির পাত্র ফেটে যেত, তুমি দিতে। আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে আপনি ভগবান, কিন্তু দেখা গেল আপনি একটি রাক্ষস।”
এই ভিডিওটি এখানে ( here ) দেখা যাবে।
FACT CHECK
নিউজমোবাইল ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করে দেখেছে যে এটি অসত্য।
ভিডিওটির কিফ্রেমগুলির রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আমরা একটি ইউটিউব ভিডিও খুঁজে পেয়েছি, যার শিরোনাম: পাটনা কা বেরহম টিচার অব সলাখোঁ কে পিছে | বিহার | ভাইরাল ভিডিও ( Patna का बेरहम टीचर अब सलाखों के पीछे | Bihar | Viral Video )। এটি ৭ জুলাই, ২০২২-এ নিউজ চ্যানেল টিভি৯ ভারতবর্ষ ( TV9 Bharatvarsh) –এর অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট দ্বারা প্রকাশিত।
প্রকৃতপক্ষে, ইউটিউব ভিডিওটি পাটনার ধানরুয়ার একটি ঘটনার ছবি দেখায়, যেখানে একটি ছয় বছরের ছেলেকে তার শিক্ষক মারধর করছিল। অভিযুক্ত অমরকান্ত কুমারকে পরে পুলিশ গ্রেফতার করে।
ভাইরাল ভিডিওটির মূল ফ্রেমগুলি ইউটিউব ভিডিওর সঙ্গে অবিকল মিলে যায় (যেটুকু নিউজ চ্যানেল বাচ্ছাটির পরিচয় গোপন রাখতে ঝাপসা করেছে সেইটুকু বাদে), এবং এর থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক জালোরের ঘটনার নয়।
বিহারের ঘটনা সম্পর্কে একটি গুগল কিওয়ার্ড সর্চ করে আমরা ৭ জুলাই, ২০২২ তারিখের নিউজঅয়্যার এএনআই ( ANI )-এর একটি টুইট ( tweet ) পেয়েছি৷ টুইটটির সংযুক্ত স্ক্রিনগ্র্যাবগুলি ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে হুবহু মিলে যায়৷
টুইটটিতে পাটনার এসএসপি–র একটি বিবৃতিও রয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে “শিক্ষক শিশুটিকে এক ছাত্রীর সাথে কথা বলতে দেখে তাকে মারধর করেছিলেন। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।”
বিভিন্ন সংবাদ নিবন্ধ ২০২২ সালের জুলাইয়ে ধানরুয়ার ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছে৷ দ্য হিন্দু, দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল, হিন্দুস্তান টাইমস, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ডের ( The Hindu, The Free Press Journal, Hindustan Times, Republic World ) মতো মিডিয়া হাউসগুলি তাদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিতে ঘটনাটি কভার করেছে, যা আসল ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে৷
রিপাবলিক ওয়ার্ল্ডের মতে, ভিডিওটি একটি প্রাইভেট কোচিং ইনস্টিটিউটের — জয়া ক্লাস কোচিং ইনস্টিটিউট, বীর ওরিয়ারা, পাটনার সংলগ্ন মাসৌরি জেলার ধানরুয়ার।
সুতরাং, এটি নিশ্চিত করা হয়েছে যে ভাইরাল ভিডিওটি ধানরুয়ার, যাতে দেখা যাচ্ছে একজন শিক্ষক নির্দয়ভাবে একটি শিশুকে মারধর করছেন, এবং রাজস্থানের জালোরের ঘটনার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।